টিপস

কার্বুরেটর নাকি ফুয়েল ইঞ্জেকশন কোনটি ভালো???


কার্বুরেটর নাকি ফুয়েল ইঞ্জেকশন কোনটি ভালোঃ বাজারে এখন দুই ধরনের মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে। একটিতে রয়েছে কার্বুরেটর সিস্টেম। অন্যটি ফুয়েল ইঞ্জেকটেড। বহুদিন ধরে কার্বুরেটর সম্বলিত মোটর বাইক সড়কে রাজত্ব করে আসছে। কিন্তু অতি সম্প্রতি কার্বুরেটর সিস্টেমে হঁটাতে এসেছে ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেমের বাইক। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জেগেছে, কোন পদ্ধতির মোটরসাইকেল ভালো। কার্বুরেটর বনাম ফুয়েল ইঞ্জেকশন।

কার্বু্রেটর ইঞ্জিন এবং ফুয়েল ইঞ্জেকশন পদ্ধতির মোটরসাইকেলের পার্থক্য বুঝতে হলে এগুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে।

কার্বুরেটর সম্বলিত বাইক ইঞ্জিনের দহনের জন্য জ্বালানি সংগ্রহ করে কার্বুরেটর এর মাধ্যমে। কার্বুরেটর এমন একটি যন্ত্র যেটা বাতাস এবং জ্বালানিকে কম্বাসশন চেম্বারে পৌঁছে দেয়।

অন্যদিকে ফুয়েল ইঞ্জেকশন পদ্ধতির মোটরসাইকেল ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমের মাধ্যমে জ্বালানি ইঞ্জিনে পৌঁছে দেয়। এই মাধ্যমে ইঞ্জিনের কম্বাসশন চেম্বারে ইলেকট্রোনিক্যালি কন্ট্রোল ইঞ্জেকটেরের মাধ্যমে জ্বালানি পৌঁছায়।

কার্বুরেটের ইঞ্জিনের মতো ফুয়েল ইঞ্জেকশন পদ্ধতিতেও দহনের জন্য বাতাস প্রয়োজন হয়। এয়ার ফিল্টার থেকে ইলেকট্রোনিক কন্ট্রোল ইউনিট অথবা ইসিইউ বাতাস সংগ্রহ করে জ্বালানি সমেত ইঞ্জিনে প্রেরণ করে। ইসিইউতে একটি সেন্সর থাকে। এই সেন্সর ইঞ্জিনের তাপমাত্রা, অক্সিজেনের পরিমান, বাতাসের প্রবাহ, থ্রটল ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

কোন পদ্ধতি ভালো?

কার্বুরেটর ফিডিং সিস্টেম অনেক পুরনো প্রযুক্তি। এটিকে সেকেলে মনে হলেও এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। রয়েছে অসুবিধাও।

কার্বুরেটর ফিডিং সিস্টেমের দাম কম। এর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম। যেকোনো অবস্থায় এটি থ্রটলকে দ্রুত রেসপন্স করে। কম দামি ও কম সিসির মোটরসাইকেলের জন্য এটি আদর্শ। আবার অফ রোড বাইক ও ডার্ট বাইক এর জন্য এটা খুব ভালো। কেননা, এটি দ্রুতই থ্রটলের চাহিদা মাফিক ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছে দেয়।

সুবিধার পাশাপাশি কার্বুরেটর ফিডিং সিস্টেমের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম এই পদ্ধতি চালিত বাইকের মাইলেজ কম। কার্বুরেটর ফুয়েল ফিডিং সিস্টেমে চালিত বাইক ঠান্ডা অবস্থায় ইঞ্জিন সহজে চালু করা যায় না। এই বাইকে ধোঁয়াও বেশি হয়। ময়লা জমে স্পার্ক প্লাগে।

মোটরসাইকেলের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ফুয়েল ইঞ্জেকশন। এতে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়। ধোঁয়াও কম নির্গত করে। ফলে পরিবেশবান্ধব। পরিবেশ ও রাইডিংয়ের অবস্থা বিবেচনা করে এই ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে এয়ার-ফুয়েল মিশ্রণ ব্যালেন্সে রাখে। ঠান্ডা পরিবেশও এই প্রযুক্তির বাইক স্টার্ট নেয়।

ফুয়েল ইঞ্জেকশন পদ্ধতির এতসব সুবিধা থাকা সত্বেও এর বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে। প্রথমেই বলতে হয় ফুয়েল ইঞ্জেকশন জটিল পদ্ধতি। ফলে এর রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বেশি। এটি ব্যয়বহুল পদ্ধতি। ফুয়েল ইঞ্জেকশন পদ্ধতি চালিত বাইকের জন্য ভালো মানের জ্বালানির প্রয়োজন হয়। জ্বালানিতে ভেজাল থাকলে সিস্টেমটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। কম সিসি ও কম দামি মোটরসাইকেলে এই পদ্ধতি সহায়ক নয়।

এতক্ষণ জানলেন কার্বুরেটর ইঞ্জিন ও ফুয়েল ইঞ্জেকশন ইঞ্জিন চালিত বাইকের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে। এখন নিজেই ঠিক করুন কোন পদ্ধতির মোটরসাইকেল ভালো। তবে অটো মেকানিক্সদের ভাষ্য, কম সিসি, কম দামি এবং ডার্ট ও অফ রোড বাইকের জন্য আদর্শ পদ্ধতি কার্বুরেটর ইঞ্জিন। আর আপনি যদি বিলাসী ইঞ্জিন, অধিক মাইলেজ এবং পরিবেশের কথা চিন্তা করেন তবে কিনুন ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেম সম্বলিত বাইক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button